বাংলাদেশ ডাক বিভাগে পূর্বে পোস্টাল ক্যাশ কার্ড এবং ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সিস্টেম চালু ছিলো। নগদ হলো এর নতুন সংস্করণ। নগদ অ্যাপের মাধ্যমের নগদ ক্যাশ আউট চার্জ প্রতি হাজারে ৯.৯৯ টাকা (ভ্যাট ছাড়া)। আজকের পোস্ট থেকে আপনি নগদ ক্যাশ আউট চার্জ কত টাকা এবং কিভাবে নগদে ক্যাশ আউট করতে হয় সে বিষয়ে জানতে পারবেন।
নগদ হলো বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীনে মোবাইল ফোন ভিত্তিক একটি ডিজিটাল আর্থিক সেবা। আপনার যদি নগদে একটি একাউন্ট থাকে তাহলে দেশের যে কোনো প্রান্তে টাকা পাঠানো, ক্যাশ ইন, কিংবা ক্যাশ আউট থেকে শুরু করে সব ধরণের বিল পরিশোধ করতে পারবেন।
তাই সবার আগে দেখে নিন – নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম
নগদ একাউন্টে লেনদেন শুরু করলে প্রথমে নগদে ক্যাশ আউট চার্জ কত ২০২৪ সালে তা আপনার জানা উচিত। কারন যে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম এর ক্যাশ আউট চার্জ সবচেয়ে কম সেটি ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব নগদের ক্যাশ আউট চার্জ সম্পর্কে এবং কিভাবে ক্যাশ আউট করলে সর্বনিম্ন চার্জ হবে তা জানবো।
এক নজরে নগদ ক্যাশ আউট চার্জ
নগদ সারা বাংলাদেশে সর্বনিন্ম ক্যাশ আউট রেট দিয়ে থাকে। নগদ ক্যাশ আউট চার্জ কত ২০২৪ তা একনজরে দেখে নিন।
- নগদ অ্যাপ দিয়ে ক্যাশ আউট করলে প্রতি এক হাজারে চার্জ দিতে হবে মাত্র ১১.৪৯ টাকা।
- USSD কোড ডায়াল করে নগদ থেকে ক্যাশ আউট করলে প্রতি এক হাজারে চার্জ দিতে হবে মাত্র ১৫ টাকা
- নগদ ইসলামিক একাউন্ট থেকে ক্যাশ আউট করলে প্রতি এক হাজারে নগদ ইসলামিক ক্যাশ আউট চার্জ দিতে হবে মাত্র ১৫ টাকা।
উপরের আলোচনা থেকে এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন, USSD কোড ও নগদ ইসলামিক একাউন্ট এর পরিবর্তে নগদ অ্যাপ থেকে ক্যাশ আউট করলে সবচেয়ে কম খরচ হয়। তাই আর দেরি না করে ঝটপট নগদ অ্যাপ আপনার ফোনে ইন্সটল করে ফেলুন। এবং উপরের নিয়ম অনুযায়ী ক্যাশ আউট করে ফেলুন।
নগদ ক্যাশ আউট চার্জ কত টাকা – বিস্তারিত
বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ সেবা দিচ্ছে নগদ । নগদে ক্যাশ আউট করার কয়েকটি উপায় আছে। নগদ ক্যাশ আউট চার্জ কত অর্থাৎ নগদে হাজারে কত টাকা কাটে হবে সেটা নির্ভর করছে আপনি কোন উপায়ে ক্যাশ আউট করবেন তার উপর। ক্যাশ আউট করার কয়েকটি উপায় আছে । যেমনঃ
- USSD কোড ডায়াল করে ক্যাশ আউট
- নগদ অ্যাপ থেকে ক্যাশ আউট
- নগদ ইসলামিক একাউন্টে ক্যাশ আউট
এখন, কোড নম্বর ডায়াল করে নগদ থেকে ক্যাশ আউট করলে যে চার্জ কাটবে, নগদ অ্যাপ থেকে তার চেয়ে কম চার্জ কাটবে। কোন মাধ্যমে কিভাবে নগদ থেকে ক্যাশ আউট করলে কত টাকা চার্জ দিতে হবে তা নিয়ে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হবে।
অ্যাপ থেকে নগদ ক্যাশ আউট চার্জ কত
বর্তমান যুগ হলো এন্ড্রয়েড মোবাইলের যুগ। এখন সবার হাতে হাতে এন্ড্রয়েড ফোন। অ্যাপ থাকলে আপনার আর কষ্ট করে কোড নম্বর মনে রাখতে হবে না। নগদ অ্যাপ এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অ্যাপ থেকে ক্যাশ আউট করলে সবচেয়ে কম টাকা চার্জ দিতে হয়।
আপনার কাছে যদি এন্ড্রয়েড ফোন থাকে তাহলে আর দেরি না করে এখনি গুগল প্লে ষ্টোর থেকে নগদ অ্যাপটি নামিয়ে ফেলুন। এরপর নগদ অ্যাপে প্রবেশ করে নগদ উদ্যোক্তার নাম্বারটি লিখবেন অথবা কিউ আর কোডটি স্ক্যান করতে হবে। আপনি কত টাকা ক্যাশ আউট করবেন তার পরিমাণটি লিখে পরবর্তীতে নগদ একাউন্টের পিন নম্বরটি দিবেন। সবশেষে Next চাপলে “Tao & hold to confirm অপশনটি আসবে । এই অপশনে ট্যাপ করে ধরে রাখলে ক্যাশ আউট এর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
নগদ অ্যাপ দিয়ে একাউন্ট থেকে ক্যাশ আউট করলে আপনাকে প্রতি হাজারে মাত্র ৯.৯৯ টাকা খরচ করতে হবে। ভ্যাট সহ এই খরচ হবে মোট ১১.৪৯ টাকা। অর্থাৎ এক হাজার টাকা ক্যাশ আউট করতে চাইলে আপনার একাউন্টে মোট ১০১১.৪৯ টাকা থাকতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে যে সকল মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে তার মধ্যে তুলনামূলক সবচেয়ে কম খরচ হয় নগদ অ্যাপে ক্যাশ আউট করতে।
সাজেশনঃ নগদ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়
USSD কোড ডায়াল করে নগদ ক্যাশ আউট চার্জ কত
নগদের ক্যাশ আউট করার জন্যে *167# কোড নম্বরটি ব্যবহার করা হয়। মোবাইল মেন্যু থেকে ক্যাশ আউট করতে হলে প্রথমে আপনার নিকটস্থ নগদ এজেন্টের কাছে যেতে হবে। এরপর *167# ডায়াল করে Cash Out অপশনে প্রবেশ করে নগদ এজেন্ট এর নাম্বার প্রদান করুতে হবে। কত টাকা ক্যাশ আউট করবেন সেই অপশনে এমাউন্টটি লিখে লিখে রিপ্লাই করতে হবে। সর্বশেষ নগদ একাউন্টের পিন নাম্বারটি প্রদান করার মাধ্যমে ক্যাশ আউট এর কার্য সম্পন্ন হবে।
এভাবে মোবাইল থেকে কোড নম্বর ডায়াল করে Nagad থেকে টাকা তুলতে ক্যাশ আউট চার্জ হিসেবে ১৩.০৫ টাকা দিতে হবে। এর সাথে ভ্যাট যুক্ত হয়ে মোট চার্জের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রতি হাজারে ১৫ টাকা। সুতরাং সরকারি ভ্যাট সহ নগদে ক্যাশ আউট চার্জ হিসেবে প্রতি এক হাজারে আপনাকে অতিরিক্ত ১৫ টাকা খরচ করতে হবে।
নগদ ইসলামিক একাউন্টে ক্যাশ আউট চার্জ কত
নগদ ইসলামিক একাউন্টে থেকে টাকা তুলতে ক্যাশ আউট চার্জ হিসেবে এখানেও আপনাকে ১৩.০৫ টাকা দিতে হবে। এর সাথে ভ্যাট যুক্ত হয়ে মোট চার্জের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রতি হাজারে ১৫ টাকা। সুতরাং সরকারি ভ্যাট সহ নগদ ইসলামিক একাউন্টে থেকে প্রতি এক হাজার ক্যাশ আউট করার জন্যে চার্জ হিসেবে আপনার একাউন্টে ১১৫ টাকা থাকতে হবে।
নগদ ব্যবহারের এর সুবিধা
নগদ বর্তমানে তার অনন্য সেবা, সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ সহ কিছু বিশেষ সুবিধার জন্যে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে। এ কারণেই নগদ এখন চলে এসেছে সবার হাতে হাতে।
এখন দেশের সকল প্রান্তে নগদ এর ক্যাশ আউট অথবা ক্যাশ ইন ইত্যাদি লেনদেন সংক্রান্ত যে কোন কাজ সহজেই নিকটস্থ এজেন্ট থেকে করা যায়। এছাড়া যে কোন শ্রেণী পেশার লোক যাতে নগদ অ্যাপ ব্যবহার করতে পারে এজন্যে নগদ অ্যাপ অত্যন্ত সরলভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এর অটোমেটিক লগ আউট সিস্টেমের কারণে ফোন হারিয়ে গেলেও অন্য কেউ আপনার একাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না।
এছাড়া, নগদ অ্যাপ থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, আয়কর ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের বিল ঘরে বসেই প্রদান করা যায়। আবার আপনার মাসিক কিংবা বাৎসরিক আয় ব্যয়ের হিসাবও রাখতে পারবেন।
নগদের আর একটি আকর্ষণীয় দিক হলো, সব সময়ই এর বিভিন্ন ধরণের অফার থাকে। এই অফারগুলো ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী দেয়া হয় যেন তাদের অর্থ কিছুটা সাশ্রয়ী হয়। নগদ অ্যাপের নোটিফিকেশন অন করে রাখলে নিত্য নতুন অফারের তথ্য আপনার হাতের নাগালেই চলে আসবে।
একদিকে যেমন নগদ এর মুনাফা অফার অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর তুলনায় সর্বোচ্চ, তেমনি অপরদিকে আপনি ইচ্ছে করলেই এ মুনাফা গ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারবেন। আবার নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ইসলামিক ব্যাংকিং সেবাও গ্রহণ করতে পারেন।
এত সব সুবিধার কারণেই নগদ খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তার দিক থেকে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোকে ক্রমশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
পরিশেষে
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে থাকতে নগদ ক্যাশ আউট চার্জ কত অর্থাৎ নগদে খরচ কত সে বিষয়টি নিয়ে আশা করি আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এছাড়া আর কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। এ সম্পর্কিত আরো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।